পাতালগঞ্জের কলা বিজ্ঞান
এক ছিল গ্রাম, নাম তার পাতালগঞ্জ। সেই গ্রামের প্রতিটি মানুষ শিক্ষিত হতে চাইত, তাদের শিশুদের ভালো স্কুলে পড়ানোর জন্য উদগ্রীব থাকত। সেই গ্রামে থাকত এক ছোট্ট মেয়ে, নাম তার মিনা। মিনার মা-বাবা খুবই গর্বিত ছিলেন কারণ মিনা ছিল সুন্দর মেধাবী। কিন্তু মিনা শুধু পড়াশোনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত না; সে চারপাশের জগৎ সম্পর্কে জানার চেষ্টাও করত।
একদিন বিদ্যা আনতে নতুন শহরে যাত্রা করল মিনা। শহরে এসে সে নানা ধরণের শিক্ষার ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করল। কখনও সে বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করত, কখনও গণিত নিয়ে গণনা, আবার কখনও কিছু সময় কাটাত কলাবিদ্যায়, যেমন ছবি আঁকা, গান গাওয়া ইত্যাদি।
তার শহরে থাকার সময়, মিনা একটি সংগ্রহশালায় যায়। সেখানে গিয়ে সে বিশাল বিশাল ছবি, মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও নানান ঐতিহাসিক সামগ্রীর সাথে পরিচিত হয়। সে সেখানে একটি বইয়ের দেখা পায়—“জন্ম থেকে জ্ঞানী”। মিনা সেই বই হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করে। বইটি তাকে শেখায় কিভাবে বিজ্ঞান আর কলার মিলনের মাধ্যমে নতুন উদ্ভাবন সম্ভব।
মিনা বুঝল, শুধু পুঁথিগত বিদ্যা না, বরং জীবনের অন্য ক্ষেত্রেও জ্ঞান অর্জন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে দেখল কিভাবে সংগীত, আর্ট, ও বিজ্ঞানের মতো বিভিন্ন শাখা জীবনের বিভিন্ন দিককে আরো রঙীন ও সমৃদ্ধ করে তোলে।
একদিন মিনা শহরে একটি মেলা দেখতে যায়। সেখানে সে বিভিন্ন ধরনের মানুষকে দেখতে পেল—কেউ কাঠ শিল্পী, কেউ মৃৎশিল্পী, কেউ ছিলেন উদ্ভাসিত বিজ্ঞানী আবার কেউ লোক সংগীত শিল্পী। মিনা তাদের প্রতিটি ক্ষেত্রের সাথে পরিচিত হলো এবং উপলব্ধি করল যে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই কিছু না কিছু শেখার আছে।
গ্রামে ফিরে এসে, মিনা তার বন্ধুদের এই শিক্ষার কথা শোনাল। সে বলল, “পড়াশোনা আমাদের জীবনের এক অত্যাবশ্যক অংশ, কিন্তু আমরা যদি কলা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে জ্ঞান অর্জন করি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে।” তার বন্ধুরা বিস্মিত হয়ে তার কথা শুনল এবং ঠিক করল তারাও পড়াশোনার পাশাপাশি অন্য ক্ষেত্রেও নিজেদের মেলে ধরবে।
মিনার অনুপ্রেরণায় পাতালগঞ্জের মানুষ শুধু শিক্ষার নয়, জীবনকে নানা রঙে সাজানোর জন্য তৎপর হলো। মিনার এই প্রচেষ্টা বুঝিয়েছিল, শিক্ষা আর জ্ঞান শুধুমাত্র বইয়ের ভিতর সীমাবদ্ধ না রেখে বহির্বিশ্বের প্রতিটি কোণায় ছড়িয়ে দিতে হবে।
এ গল্পের শিক্ষা হলো—শিক্ষার সাথে সাথে অন্যান্য ক্ষেত্রেও জ্ঞান অর্জন করা জীবনের সাফল্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ এই বহুমুখী জ্ঞান আমাদের জীবনকে সম্পূর্ণ করে তোলে এবং আমাদের সৃষ্টিশীলতায় উচ্চতা এনে দেয়।