দীপুর মহামূল্যবান সম্পদ
এক যে ছিলো ছেলে, তার নাম ছিলো দীপু। দীপু ছিলো অমায়িক এবং মেধাবী, কিন্তু তার একটি বদঅভ্যাস ছিলো—সে সময়ের মূল্য বুঝতে পারতো না। সে সব কাজই ঢিলেমিতে করতো, এবং সময়ের গুরুত্ব কখনো ঠিক করে অনুভব করতো না।
একদিন, দীপুর বাবা তাকে ডেকে বললেন, “দীপু, তুমি যদি সময়ের মূল্য না বোঝো, তাহলে একদিন তুমি বড় বিপদে পড়বে।” দীপু ভেবে দেখলো, কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলো না।
পরের দিন ছিলো তার স্কুলের পরীক্ষা। রাতে সে স্কুলের বইগুলো বারবার দেখে ঘুমিয়ে পড়ল। সকালে উঠেই ভাবলো, “এখনও তো অনেক সময় আছে, আমি নাস্তা করে তখন পড়ে নেবো।” কিন্তু নাস্তা করতে করতে ঘণ্টা পেরিয়ে গেলো। ততক্ষণে স্কুলে যাবার সময় হয়ে গেলো।
দীপু তাড়াতাড়ি স্কুলে গেলো, কিন্তু ক্লাসে গিয়ে দেখে পরীক্ষা চলছে। সে কিছুই প্রস্তুতি নিয়ে আসেনি। দীপু দেখে তার বন্ধুরা সবাই খুব ভালোভাবে লিখছে আর সে কিছু বুঝতে পারছে না। তার মনে হলো, “ইশ! একটু আগে যদি পড়ে নিতাম, তাহলে আজকে এই বিপদে পড়তে হতো না।”
পরীক্ষা শেষে সে নিজেই নিজের ওপর আফসোস করলো। তখনই সে স্থির করলো, “এমন হবে না আর। আমি প্রতিদিন একটু একটু পড়বো আর প্রতিটি কাজ সময়মতো করবো।”
এরপর দীপু প্রতিদিন ঠিক সময়মতো পড়তে বসলো এবং তার সব কাজ সুচারু ভাবে শেষ করলো। সে তার খেলাধুলায়ও মনোযোগ রাখলো এবং যখনই কিছু অসুবিধা হতো, সে ঠিকভাবে পরিকল্পনা করেই সব সামলাতে লাগলো।
কিছুদিন পরে, স্কুলে আবার একটি বড় পরীক্ষা আসে। এবারে দীপু ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় বসলো এবং নিজের সোনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভালো ফলাফল করলো। সে আর তার মা-বাবা খুব খুশি হলেন।
এই অভিজ্ঞতা থেকে দীপু বুঝলো, সময়ের মূল্য না বুঝলে জীবনে সাফল্য লাভ করা কঠিন। সময় শুধু এগিয়ে চলে, সে কারো জন্য অপেক্ষা করে না। তাই সময়কে ঠিক ভাবে ব্যবহার করতে হবে যেন যেকোনো বাধাকে অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায়।
দীপু এরপর থেকে আর কখনোই সময় অপচয় করলো না। সে শিখেছে যে কোনো কাজই সময়মতো করা হলে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই হয়ে ওঠে সার্থক এবং সুন্দর। আর এভাবেই সে সময়ের মূল্য বোঝা শিখে গেলো ও জীবনে সত্যিকারের সাফল্য লাভ করলো।
এভাবেই দীপু জানলো যে, সময়ের মূল্য দিয়ে চললে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই হবে সফলতার পথে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। আর সেই শিক্ষাই তার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ হয়ে উঠল।