শিম
শিম বা বীন এক ধরনের সবজি যা প্রচুর পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। শিমে রয়েছে প্রোটিন, আঁশ, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
শিমের উপকারিতা
প্রোটিন সমৃদ্ধ: শিম সবজি হিসেবে একটি অন্যতম প্রোটিনের উৎস, বিশেষ করে যারা নিরামিষভোজী, তাদের জন্য এটি প্রোটিনের চাহিদা পূরণে সহায়ক।
আঁশ যুক্ত: শিম পেটের জন্য বেশ ভালো কাজ করে, কারণ এটি আঁশ সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরল কমায়: শিমে থাকা দ্রবণীয় আঁশ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: এর মধ্যে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের উপর প্রভাব রাখতে পারে।
আয়রন সমৃদ্ধ: আয়রনের ভালো উৎস হওয়ায় এটি রক্তাল্পতা প্রতিরোধে কার্যকর।
শিমের ক্ষতিকারক দিক
লেকটিনের উপস্থিতি: কিছু বাঁধাকপি প্রজাতি, যেমন কাঁচা কিডনি শিম, লেকটিন নামক এমন একটি প্রোটিনের আধিক্য থাকতে পারে, যা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই কারণে, শিম সঠিকভাবে রান্না করা অত্যন্ত জরুরি।
ফাইটোহেমাগ্লুটিনিন: বিশেষ করে কাঁচা বা অপর্যাপ্ত রান্না করা লাল কিডনি শিমে ফাইটোহেমাগ্লুটিনিন নামে থাকা প্রোটিন বিষাক্ত হতে পারে।
সঠিক মাত্রায় সেবন
প্রতিদিনের খাবারে শিমের সর্বোচ্চ সেবনযোগ্য পরিমাণ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য ১ কাপ (প্রায় ১৫০-২০০ গ্রাম) সিদ্ধ বা রান্না করা শিম। তবে এদের সঠিকভাবে রান্না করা জরুরি যেন ক্ষতিকারক প্রোটিনগুলি দূর হয়।
কার জন্য শিম উপকারী
ডায়াবেটিস রোগী: শিমে কম গ্লাইসেমিক থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য হতে পারে।
হৃদরোগী: কম কোলেস্টেরল ও উচ্চ আঁশযুক্ত হওয়ায় হৃদরোগীদের জন্য শিমের উপকারিতা রয়েছে।
কার জন্য শিম ক্ষতিকারক
যাদের গ্যাস বা এসিডিটির সমস্যা আছে: আঁশযুক্ত হওয়ায় শিম কিছু মানুষের মধ্যে গ্যাস বা এসিডিটি বাড়াতে পারে, তাদের জন্য এটি সীমিত পরিমাণে গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
কিডনি রোগী: শিমের উচ্চ পটাশিয়াম কিডনি সমস্যাযুক্ত রোগীদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।
সর্বোপরি, সঠিক উপায়ে রান্না এবং উপযুক্ত পরিমাণ গ্রহণ শিমের পুষ্টিগুণ সর্বোচ্চ করার জন্য সহায়ক। সবার শরীর একরকম নয়, তাই স্বাস্থ্যের অবস্থা অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা ভাল।