| |

সাহসী রাজু ও ছোট্ট কুকুরছানা

এক ছিলো একলা একাই সাহসী একটি ছেলে, নাম তার ছিলো রাজু। সে ছিলো খুব মিষ্টি এবং সাহসী, সবসময় অন্যদের সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকতো। তার বাড়ির কাছেই ছিলো একটি সুন্দর ঝর্না, যেখানে সব সময় হাসাহাসি আর মজা করতো সবাই। রাজু অনেকবার তার বন্ধুবান্ধবদের সেই ঝর্নার কাছে নিয়ে গিয়েছে আর সেখানেই তাদের নিয়ে খেলাধুলা করতো।

একদিন, স্কুল শেষে রাজু আর তার বন্ধু বিলু ঝর্নার কাছেই একটু বসতে গিয়েছিলো। হঠাৎ তারা দেখলো এক ছোট্ট কুকুরছানা পানিতে পড়ে গেছে আর সাহায্য চাচ্ছে। রাজুর মন খুব নরম, সে কুকুরটিকে না বাঁচিয়ে থাকতে পারল না। তাড়াতাড়ি সে পানিতে নেমে গেলো।

কিন্তু রাজুর বাবা সবসময় তাকে বলেছিলেন, “জল বা অন্য বিপদের মুখে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করো। অন্যকে সাহায্য করার আগে, নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করো।” এই কথা রাজু মনে রেখেই কুকুরটিকে তুলতে গিয়ে সে নিজে আরো গভীর জলের দিকে এগিয়ে গেলো।

বিলু তখন বলল, “রাজু, অপেক্ষা করো! তোমার নিজে সাবধান থাকতে হবে। আগে তুমি নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করো, তারপর কুকুরটাকে তোলার চেষ্টা করো।”

রাজু একটু থেমে গেলো আর ভাবলো, ‘বিলু ঠিকই বলছে। আমি যদি নিজের জন্য সাবধান না হই, তাহলে আমার সাথে একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমি তো নিজেই বিপদে পড়ে যাবো।’

তখন রাজু পাশের একটি লম্বা লাঠি তুলে নিলো এবং সেই লাঠি কুকুরের কাছে বাড়িয়ে দিলো। যেই না কুকুরটিকে লাঠি দিয়ে তুলতে শুরু করলো, সে দেখতে পেলো কুকুরটি লাঠির উপর থাবা রেখে উপরে আসছে।

এইবার সে খুব দক্ষতার সাথে কুকুরটিকে নিরাপদে পানি থেকে তুলে টেনে আনতে সক্ষম হলো। রাজুর খুব খুশি লাগলো, কারণ সে কুকুরটিকে নিরাপদে রেখেছে এবং নিজের সুরক্ষার বিষয়েও সচেতন ছিলো।

এই ছোট্ট অভিজ্ঞতা থেকে রাজু একটি মূল্যবান পাঠ শিখলো। সে বুঝলো, অন্যদের সাহায্য করার আগে নিজের সুরক্ষা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, যদি আমরা নিজের সুরক্ষা নিয়ে অবহেলা করি, তাহলে আমরাতো সঠিকভাবে অন্যদের সাহায্য করারও ক্ষমতা হারাবো।

তাই রাজু প্রতিদিন তার এই শিক্ষাকে মনে রাখতো এবং বন্ধুদেরও শেখাতো। তার এই গল্পের মাধ্যমে সে সবাইকে শেখাতে চেষ্টা করতো যে নিজের সুরক্ষা প্রথম এবং প্রধান বিষয়, এরপরই আমরা অন্যকে সাহায্য করতে পারবো।

এটাই হলো রাজুর কাহিনী, যেখানে সে নিজের সাহসিকতা আর সঠিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একটি ছোট্ট বন্ধুর জীবন বাঁচিয়ে দিলো এবং শিখলো, বিপদের মুখে আগে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সবাই এই খুশি খুশি গল্প শুনে বেশ কিছু শিখলো এবং হাসিমুখে বাড়ি ফিরলো।

এভাবেই রাজুর দিনের শেষ হলো, কিন্তু সে জানলো, জীবনের প্রতিটা মুহুর্তে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে – আগে নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করে, তারপর অন্যদের সাহায্য করতে হবে। কারণ এতে করে তার এবং অন্যান্য মানুষের জীবন আরো সুরক্ষিত হয়ে উঠবে।

Similar Posts

Leave a Reply